শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন ডেক্স: মজুরি ২০ হাজার টাকা ও নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুকসহ ১০ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতির কারণে দ্বিতীয় দিনেও সারাদেশের মতো বরিশালে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ফলে আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) ও সকাল থেকে বরিশাল নদী বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদী বন্দর ও লঞ্চঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
আর এতে করে বিপাকে পড়েছেন নৌ-যাত্রীরা।
এর আগে শনিবার (২৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেন নৌযান শ্রমিকরা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকালেও অনেক যাত্রীই ঘাটে এসে লঞ্চ চলাচল বন্ধ দেখে হতাশা প্রকাশ করে ফিরে গেছেন। লঞ্চ যাত্রী তারেক খান বলেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছি, আমি মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, ফলে নৌপথে লঞ্চই একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম।
সগির মিঞা নামে আরেক যাত্রী বলেন, লঞ্চ বন্ধ থাকায় স্পিডবোটে মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলায় যাওয়া যায়, কিন্তু যে ভাড়া চারগুণ। তাই বাসে করে লাহারহাট গিয়ে সেখান থেকে ট্রলারে ভোলা যাব।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, রোববার ঢাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সভা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি। আজ বিকেলের মধ্যে সভাটি হতে পারে। ফলে বিকেলে সিদ্ধান্ত হলে লঞ্চ চলাচল শুরু হতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি আবুল হাসেম মাস্টার জানান, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সারাদেশে এ কর্মবিরতি করেছে নৌযান শ্রমিকরা। ফলে সারাদেশের সঙ্গে বরিশাল বিভাগে সকল ধরনের পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতির এ আন্দোলন লাগাতার চলবে।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানা হোক।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবিগুলো হলো-
নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের লান্ডিং পাস দেওয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ শতাংশ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।